শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেছেন, যাত্রীদের সঙ্গে বিশেষ করে নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি বা তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা যাবে না। এজন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের কঠোর হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা আগে থেকেই চালক-শ্রমিকদের দিতে হবে। এমনকি বাসে নারী যাত্রীদের ওঠানোর সময় যেভাবে হাত ধরে টানাটানি করা হয়, তা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যাত্রীরা যাতে নিরাপদে গন্তব্যে যেতে পারেন সেদিকে সবার সমন্বিতভাবে চেষ্টা চালাতে হবে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বিশেষ সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় জানানো হয়, বরিশাল নদী বন্দরে লঞ্চের তুলনায় টার্মিনালের জায়গা সংকট রয়েছে। পল্টুন কম থাকার কারণে এ সমস্যার ফলে একসঙ্গে ১০ থেকে ১২টি লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দরে নোঙর করতে পারবে না। তাই অস্থায়ীভাবে যতো দ্রুত সম্ভব নতুন পল্টুন সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সভায়। তবে তা সম্ভব না হলে লঞ্চ চলাচলে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রেখে সিরিয়াল অনুসারে ঘাট দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া পাতারহাট লঞ্চঘাট ও লক্ষ্মীপুর লঞ্চঘাট এলাকাসহ যেসব জায়গা নাব্যতা সংকট রয়েছে, দ্রুত তা খননের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্থানীয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তাদের সভার মধ্য দিয়ে বলা হয়।
অপরদিকে নদী পথকে নিরাপদ রাখতে রাতের বেলায় মালবাহী ও বালুবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা এবং ঈদের আগে ও পরে ১ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দিনের বেলায় বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয় সভায়। পাশাপাশি নৌরুটে জাল ফেলা বন্ধ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়। এজন্য নৌপুলিশ, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তৎপর থাকার পাশাপাশি প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করা, ভাড়া না বাড়ানো, লঞ্চের চালক-মাস্টারদের জায়গায় যাত্রী পরিবহন না করা, প্রতিযোগিতায় লিপ্ত না হওয়া, সরু চ্যানেলে (মিয়ারচর) পাশাপাশি দু’টি লঞ্চ চলাচল না করা, নদী তীরের সিগনাল বাতিসহ সাংকেতিক চিহ্ন ঠিক রাখা এবং নদীর মধ্যে কোনো লঞ্চ না থামানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অপরদিকে সড়ক পথের জন্য সভার উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তগুলো হলো- ফিটনেসবিহীন মোটরযান সড়কে চালনা এবং এতে যাত্রী পরিবহন না করা, অনবিজ্ঞ ও লাইসেন্সবিহীন চালক-হেলপার দিয়ে মোটরযান চালনা থেকে বিরত থেকে ওভারলোডে যাত্রী পরিবহন না করা, চালকদের সময়মতো বিশ্রাম নিতে দেওয়া, ভাড়া ঠিক রাখা, মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে জেলা প্রশাসন, বিআরটিএ ও পুলিশ প্রশাসন আলাদা ও যৌথভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা। পাশাপাশি প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা। তবে অযথা যানবাহন থামিয়ে হয়রানিমূলক কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা যাবে না এবং ঈদের আগের ও পরের তিন দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরি চালনা বন্ধ রাখতে হবে।
এছাড়া সভা সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নদী বন্দর, নতুল্লাবাদের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রূপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় ঈদের আগে ও পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা জোরদার করা হবে। এসব জায়গা ঘিরে নৌপুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যাব সদস্যদের পাশাপাশি স্কাউট, মেরিন ক্যাডেট, আনসার, কমিউনিটি পুলিশ ও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
অপরদিকে দুর্ঘটনা বা অসুস্থজনিত কারণে যাত্রীদের উদ্ধার ও হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম মাঠপর্যায়ে কাজ করবে।
এছাড়া নদী বন্দর ও বাস টার্মিনালে যাত্রীদের বসার জন্য অতিরিক্ত যাত্রী ছাউনি নির্মাণ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
এদিকে, ঈদের আগে মাংসসহ কোনো পণ্যের দাম অযথা বাড়ানো যাবে না বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন, বাজার কমিটি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকবে। পাশাপাশি কোনো দোকানে নিষিদ্ধ ৫২ পণ্য রাখা যাবে না।
Leave a Reply